অনেক দিন পরে
এখানে অনিমেষের মা থাকে। সঙ্গে একজন কিশোরী। সেই সব সাহায্য করে। অনেক মাস পর অনিমেষ এসে হাজির। আনন্দে অনিমেষের মা অস্থির। এই বয়সে বাতে কাবু অনিমেষের মা..ছেলেকে কাছে পেয়ে আনন্দে ডগমগ। মা শুধায় অনিমেষ কে, ‘বউ মা আসবে না?’ অকারণে মিথ্যা বলা অনিমেষের না পছন্দ। তাই বলে, ‘মনীকা খুব ব্যস্ত। সময় পায় না। শহুরে মনীকার গ্রাম সম্পর্কে সততই অ্যালার্জি।
এই বাড়ী একসময় কত গমগম করত। চারদিকে কত লোক। এখন আমরা তিন ভাই তিনদিকে। একজন বিদেশে। অন্যজন দক্ষিণ ভারতে। আমি শুধু কলকাতায়। এবার সত্যিই কাজের চাপ ছিল। এই এতমাস পরে, এখানে আসা। নাহ্ এবার মাসখানেক অন্তর আসতে হবে। কথাটা মাকে বলে।
মা খুব খুশি। অনিমেষের মা ভারী সরল। বারান্দার পাশে ঘর। কিশোরী সামনে এসে দাঁড়ায়। খুব নরম স্বরে অনিমেষকে বলে, ‘বাবু, আপনি একটু অপেক্ষা করুন। ঘরটা পরিষ্কার করে দিই।’
সে বন্ধ দরজা খুলে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে আলো জ্বালিয়ে দেয়। এবার সুইচ বন্ধ করে বাইরে আসে। অনিমেষকে বলে, ‘আপনি জামাকাপড় বদলে নিন।’
অনিমেষ ঘরের মধ্যে কাপড় বদলে বাইরে আসে। এর মধ্যেই এক বালতি জল সে এনে রেখে দিয়েছে। অনিমেষ ভাল করে হাত মুখ ধুয়ে নেয়। এক ঘন্টার মধ্যে রাতের আহার শেষ। তারপর পান সুপারি চিবোতে চিবোতে ও মাকে নিয়ে বারান্দায় চাটাতেই বসে। অনিমেষ মায়ের সাথে বসে গল্প করছে। একটু দূরে সেই কিশোরী। চুপচাপ।
এবার যে যার ঘরে। শুতে যাবার আগে অনিমেষের সিগারেটের নেশায় আনচান। দরজা খোলে। দেখে, ঘরের সামনে বারান্দার থামে হেলান দিয়ে সেই কিশোরী। বাইরে অনিমেষ দাঁড়াতেই ও জিজ্ঞাসা করে, ‘কিছু দরকার?’
ওর সরল হাসি আর গায়ের স্বাভাবিক বিনয় দেখে অনিমেষের ভারী ভাল লাগে। বলে, ‘না, তেমন কিছু না।’
সিগারেট দরকার। দোকান খোলা আছে?’
কিশোরী বলে, ‘আপনি কেন কষ্ট করবেন? আমাকে দিন,নিয়ে আসি।’
ওর কথা শুনে ওর সঙ্গে আরও দু’একটি কথা বলার ইচ্ছা জাগে অনিমেষের। শুধোয়, ‘তোমার কষ্ট হবে না তো?’
‘আরে বাবু, কষ্টের কি আছে। আপনি তো বড়।’
‘তাহলে তোমার কষ্ট হবে না বলছ?’
‘না বাবু, আমায় পয়সা দিন। এই বলে কিশোরী হাত বাড়ায়।
অনিমেষ ওর হাতে কুড়ি টাকা দেয়। – ‘তোমার নাম কি?’
লজ্জা পায় কিশোরী। চোখ নামায়, ‘আমার নাম লক্ষ্মী।’ বলেই ছুটে চলে যায়।
নামটা ভারী সুন্দর। লক্ষ্মী নামটা উচ্চারণের মধ্যেই একটা নরম আদরের ছোঁয়া আছে। ওর সলজ্জ ভাব, প্রতিমার মত মুখ আর সোজা সরল কথা… সত্যিই চমৎকার। ওর চেহারার মধ্যে গাঁয়ের এক সলজ্জ সতেজ লালিত্য। পরের দিন দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর অনিমেষ শুয়ে পড়ে। একটু ঘুম আসে। যখন ঘুম ভাঙে তখন বিকেল পাঁচটা। হাতমুখ ধোয়ার জন্য ও বাইরে আসে। দেখে লক্ষ্মী একই জায়গায় একই রকম ভাবে বসে। অনিমেষকে দেখে ওর ছড়ানো পা দুটো গুটিয়ে নেয় লক্ষ্মী। আর অন্যমনস্ক ভাবে শাড়ীর খুঁট থেকে সূতো টানতে থাকে। অনিমেষের জল দরকার, তাই ঘনিষ্ঠতার সঙ্গে বলে, ‘লক্ষ্নী, মুখ ধোয়ার জল দরকার।’
‘আনছি।’ খুশি মনে লক্ষ্নী ভেতরে চলে যায়। অনিমেষের মনে হয়, জন্ম নেবার সময় থেকেই তার মুখ থেকে হাসিটি আর মোছেনি। সরলতম হাসি। শহুরে মেয়েদের ভয়ঙ্কর অট্টহাসিও অনিমেষ দেখেছে। আর লক্ষ্নী তো ফুলের মত হাসে।
অনিমেষ হাত মুখ ধুয়ে ঘরে আসতেই চা নিয়ে আসে লক্ষ্মী। অনিমেষের ইচ্ছা হয়, চা পান শেষে এবার একটু হাঁটা যাক। ছোট ক্যামেরা নিয়ে অনিমেষ বাইরে আসে। দেখে, ঠিক ওইখানে একই রকম ভাবে বসে লক্ষ্নী। বাইরে এসে অনিমেষ ধন্দে পড়ে যায়। কোথায় যাবে? না আজ শুধু একাই। কাল থেকে পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা পর্ব। আজ শুধু ও জঙ্গলে যাবে। এই পাকদন্ডি পথ, সব্জির খেত পেরিয়ে জঙ্গলের দিকে চলে গেছে। অনিমেষ কয়েক পা মাত্র হেঁটেছে। দমকা হাওয়ায় ওর পাঞ্জাবির প্রান্তভাগ ঝোপ গাছে আটকে যায়। পিছন ফিরে পাঞ্জাবিটা খুলতে দেখে, ঠিক ওই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে লক্ষ্মী। আরো কিছু হাঁটার পর জঙ্গল। আদিম নয়। এখন অনেক পরিষ্কার। চারিদিকে কতরকমের গাছ। অন্যান্য ফুল ফলের গাছও আছে। কতরকমের পাখি আর তার শব্দ। বিকেলের শেষ রোদে জঙ্গলের সৌন্দর্য অনেক খানি বেড়ে গেছে।
একটা ফাঁকা জায়গায় আধশোয়া গাছের একটা ডালে অনিমেষ বসে। গ্যাঁট হয়ে। নীরব নিস্তব্ধ সুগন্ধী জঙ্গলে ডুবু ডুবু সূর্য। মন কেমন করা ঠান্ডা বাতাস। মধুরতম আনন্দে অনিমেষ যেন পাখির সঙ্গে পাখি, গাছের সঙ্গে গাছ আর ফুলের সঙ্গে ফুল হয়ে যাচ্ছে। গভীর আত্মমগ্ন। হঠাৎ একটা শব্দ। পর পর শব্দ। অনিমেষ মুখ ফেরায়। দেখে লক্ষ্নী। ঠিক সেই মূহূর্তে সেও মাথা তুলে অনিমেষের দিকে তাকিয়ে। অনিমেষ লজ্জা পেয়ে যায়। দেখে শুকনো ডাল এক জায়গায় জড়ো করেছে লক্ষ্নী। অনিমেষের হাসি পায়। উঠে দাঁড়ায়। কোমরে হাত রেখে মুখ তুলে ওকে দেখে। দেখতেই থাকে। ওর চুড়ীর শব্দ শোনা যাচ্ছে। এবারে সত্যিই লজ্জা। তবুও ঘাড় ফিরিয়ে অনিমেষ দেখতে থাকে। লক্ষ্নীও নিশ্চই ওকে দেখে হেসেছিল। সম্ভবত সেটাই তখন ওর সারা মুখে ছড়িয়ে আছে। অনিমেষ আরো লজ্জা পায়। ওর মনে হয়, লক্ষ্নী যেন কিছু বলল ওকে। কিন্তু এতটাই ঘাবড়ে গেছে যে ঠিক শুনতে পায় নি। ওর দিকে ফিরে শুধোয়, ‘কিছু বলছ?’
‘আপনি উঠে দাঁড়ালেন কেন?’
এমন প্রশ্ন শুনে অনিমেষের মনে প্রচন্ড অপমানের ঝাঁঝ। কী উত্তর দেওয়া উচিৎ, বুঝে উঠতে পারছে না।
আবার প্রশ্ন, ‘বাড়ী ফিরবেন?’
ওর কথায় পরিহাস থাকলেও অনিমেষ রাগতে পারছে না। কেন? কিন্তু ক্রোধ তো হওয়া উচিৎ। অনিমেষেরই বোকামি। দায়ী ওর অস্থির মানসিকতা। অনিমেষ ভাবে, যাকগে। এখন এই স্থান পরিত্যাজ্য। ও ফেরার জন্য তৈরী। পিছন ফিরতেই আবার ডাক, ‘বাবু। অনিমেষ আবার ফিরে তাকায়। দেখে লক্ষ্নীর পায়ের কাছে শুকনো ডাল একসঙ্গে বাঁধা।
হঠাৎ সঙ্কোচের সঙ্গে বলে, ‘মাথায় তুলে দেবেন?’
অনিমেষ তুলে দেয়। এই সাহায্য ওর খুব ভাল লাগে। একটা খুশির ভাব সারা মুখে, মাথায় শুকনো ডাল। শেষ রোদে ও যেন মায়াময়। ওর এই ভঙ্গী দেখে অনিমেষ ক্যামেরা সেট করে, ওকে লক্ষ্নী বলে ডাকে।
লক্ষ্নী ঘাড় ফিরে তাকায়, ‘আমায় বললেন?’
অনিমেষ হ্যাঁ বলে ওর কাছে যায়। তারপর বলে, ‘তুমি ঠিক এইভাবে দাঁড়াও।
লক্ষ্নী খুব অবাক। মুখে সেই ছবি। অনিমেষের দিকে তাকায়, হালকা রোদ্দুর ওর গালে যেন চুমু খাচ্ছে। ওর মুখে সেই মজুত হাসি আর আলো। অবিশ্বাস্য ভাবে মিশে যাচ্ছে। ফটো তোলা শেষ হতেই ও অনিমেষকে শুধায়, ‘কি করলেন? কি করবেন? ওর সরল কৌতূহল।
অনিমেষ বুঝতে পারছে না। সত্যিই তো। কি বলা উচিৎ। শুধু বলে, পরে বলব।
রাতে খাওয়াদাওয়ার পর চুপচাপ বসে আছে অনিমেষ। ঘুম কিছুতেই আসছে না। মায়ের মুখে শুনেছে, জঙ্গলে নাকি মাস পাঁচেক আছে এই মেয়েটি। ওর বাবা মা নেই। কোন আত্মীয় দায়িত্ব নিতে রাজী নয়। শেষে এই বাড়ীতেই আশ্রয়। মারও সুবিধে। এই বয়সে একটা অবলম্বন দরকার।
এই প্রাকৃতিক পরিবেশের নির্জনতায় কখন কে যে বেপোরোয়া হয়ে ওঠে। অনিমেষ নিজের কাছেই অবাক। অন্যতর লোভ বাসা বাঁধছে। সামনে ওর অমোঘ আকর্ষণের চোরাবালি।
আলো জ্বেলে বিছানায় গা এলিয়ে দিল অনিমেষ। কিছুক্ষণ পরই দরজায় মৃদু আওয়াজ। হাওয়ার ঝাপটা ভেবে চোখ বন্ধ করে অনিমেষ। এবার কেউ যেন দরজায় চাপড় মারছে আস্তে। শুয়ে শুয়েই অনিমেষ জিজ্ঞাসা করে, ‘কে?’ কোন উত্তর নেই।
আবার দরজায় শব্দ। অনিমেষ ধীরে সুধোয়, ‘কে?’
এবার চুড়ির শব্দ। তারপর খুব আস্তে শোনা যায়, আমি,… লক্ষ্মী।’
অনিমেষ অবাক। দরজা খুলে দেয়। লক্ষ্নী ওর ঘরে চলে এসেছে। অনিমেষের বুক ধড়ফড়। ভাবে, ওকে কি ও চলে যেতে বলবে? কিছু বলার আগেই দরজা বন্ধ করে ছিটিকিনি দিয়ে দেয় লক্ষ্মী। অনিমেষের শরীরে কাঁপন, ঘেমে উঠছে। গলার স্বর আমতা আমতা করে বলে, ‘দরজা বন্ধ করলে কেন?’ বলেই দরজাটা খুলতে যায়।
চকিতে দরজাটার আড়াল করে দাঁড়ায় লক্ষ্মী। হাসতে থাকে।
ঘেমেটেমে একসার অনিমেষ। বিছানায় বসে পড়ে। লক্ষ্মীকে দেখতে থাকে। মেয়েটি আঠারো বছরের বেশি নয়। লম্বাও নয়, খাটোও নয়। পাকা গমের মত রং। মুখশ্রী মোটামুটি। যৌবন শরীরে টানটান। সুঠাম চেহারা। চোখে শিশুসুলভ চাপল্য। যৌবনের গভীরতা মেয়েটির অনেক। অনিমেষকে ঘামতে দেখে মেয়েটি হেসে ফেলল। অনিমেষ এবার ডাকে, ‘লক্ষ্মী।’
‘বলুন’
‘এখানে এস।’
‘কোথায়’।
‘আমার কাছে এসে বসো।’
লক্ষ্মী অনিমেষের পাশে গিয়ে বসে। গলার স্বর তেমনি মিষ্টি ও সরল।
অনিমেষ থমকে গেছে। ওকে বলে, ‘হঠাৎ এত রাত্রে এলে?’
‘হ্যাঁ।’
‘কেন’?
‘আপনাকে খুব ভাল লেগেছে।’
‘মানে?’
‘হ্যাঁ, আমার বান্ধবীরাতো, মাঝে মাঝে, মানে ইয়ে করে।….আমার কেউ নেই। আমার বুঝি ইচ্ছে হয় না?
মানুষ এত সহজ আর সরল হয়? অনিমেষ কৌতূহলী। লক্ষ্মীকে বলে, ‘আমি তো তোমার চেয়ে অনেক বড়। তোমার ভাল লাগবে?’
‘হ্যাঁ, আপনাকে খুব পছন্দ হয়েছে।’ লক্ষ্মীর মাথা নিচু।
‘তুমি কি এর আগে কারুর সঙ্গে করেছ?’
অনিমেষের কথাটা যেন ছুরি বিধিয়ে দেয় ওর বুকে। মূহূর্তে চোখ জ্বলে ওঠে। নাকের পাটা ফুলে যায়। কোনও মেয়ে রেগে গেলে যেমন ভীষন দেখায়… তেমনি দেখাতে লাগে ওকে। স্ক্রুর দৃষ্টিতে অনিমেষকে নিরীক্ষণ করে কিছুক্ষণ।
‘বাবু আপনার এ কথা বলা উচিৎ নয়।’ যেন লক্ষ্মী আহত।
‘কেন?’
‘আমার কোন কোন বন্ধু অবশ্য পয়সা নেয়। কিন্তু আমি খারাপ নই।’ লক্ষ্মী দৃঢ়।
‘তোমার তো বিয়ে হয় নি। এ কাজ করা কি ঠিক?’ অনিমেষেরও একটু রাগ হয়।
‘আমার কোনদিন বিয়ে হবে না। আমার কিচু নেই। কেউ বিয়ে করবে না।…আমি পয়সার জন্য…..আপনার কাছে আসিনি।……আপনাকে কেন যেন ভাল লেগে গেল।’ লক্ষ্নীর মাথা আবার নোয়ানো।
এখনি বিজ্ঞান উন্নত। মিলনের পর ট্যাবলেট খাওয়ালে ভয়ের কিছু নেই।….অথচ ওর কথায় অনিমেষ বিহ্বল। লক্ষ্নী ওর জীবনে আসার আগে ও কি সাধু ছিল? এই মূহূর্ত অসম বয়সী নারী পুরুষ পাশাপাশি। কোন তাড়াহুড়ো নেই। অথচ অন্য উষ্ণতার জারণ। তবু মুখোস দরকার। অনিমেষ ওর হাত ধরে। সহজ ভাবে বলতে থাকে, ‘দেখো…মিলনটাই বড় কথা নয়। জীবনকে জানাই বড়। আমি তোমাকে উপদেশ দেব। যা বলব করবে।…’
‘আমি উপদেশ নেব।’ লক্ষ্নী বরাবর সরল। সে আনন্দে খুশি।
অনিমেষের নির্দেশে সে বিছানায় শোয়। তার কাপড় অনেকটা হাঁটুর ওপর। লক্ষ্নী খুশি। তার জানার পথ খাঁটি ও সত্য।
অনিমেষ ওর পাশে বসে, ওকে বলে, এই সব জাগতিক পোষাক থেকে মুক্ত হওয়া দরকার।’ অনিমেষ গেঞ্জী খুলে ফেলে।
একটা আবেগে লক্ষ্নী বেপোরোয়া হয়েছিল কিন্তু এখন? কেমন যেন অস্বস্তি। শুধোয়, আমাকে সব খুলতে হবে?’ ইতস্তত করে।
হ্যাঁ। অনিমেষ জোর করে। ‘শরীরের দরজা খুলতে হয়। এই রহস্যময় খেলার এটাই প্রথম ধাপ।’
অনিমেষ ভাবে, কথাটা কি ওই বলল?
‘ঠিক।’ ভাবে লক্ষ্নী। এই পরিবেশে তার মনটাও অন্যরকম। বরফ গলন। সামনে পুরুষের স্পর্ষে উত্তাপের সঞ্চালন। একটা প্রকট ভাব অনুভব করে। শেষে সে যখন পোষাক মুক্ত, তখন তার ফর্সা মুখখানা রক্তিম। ভাল করে তাকাতে পারছে না। ভয়ঙ্কর লজ্জা।
‘আমার কোন খুঁত আছে?’ এই বলে সে মনে জোর আনে। তারপর তৃপ্তি। তার সাহস আছে। একজন পুরুষের সামনে, এই রকম হতে কাঁপেনি। এটা তার কম কৃতিত্ব নয়। পরক্ষণে তার নগ্ন দেহে সে অনিমেষের দৃষ্টি লক্ষ্য করে।…ফর্সা মিষ্টি মুখে লাল আভা। তার সুন্দর স্তনের আছে নিজস্বতা, সংবেদনের অনুভূতি, পুরুষস্পর্ষের আকুলতা।
এখন সে কিশোরী নয়। পরিপূর্ণ যুবতী। ওর কল্পনাতীত রূপ দেখে অনিমেষ মুগ্ধ। উচ্ছ্বসিত হয়ে ও বলে ভাল, ভাল,…. এইবার দু’হাত মাথার পাশে রাখ, হ্যাঁ ঠিক এইভাবে।’
এবার অনিমেষের সংঘবদ্ধ ঊরুর দিকে মনোযোগ। আহ্ কি চমৎকার।
অনিমেষ বলে, ‘ওভাবে নয়। এভাবে। পা দুটো যথেষ্ট ফাঁক রাখ। সুন্দর জিনিষ… কখনো এভাবে ঢেকে রাখতে নেই।… নিজেকে খোলামেলা রাখতে হয়।
আকস্মিক ভয় আর সংশয়ে অস্বস্তি জাগে লক্ষ্নীর। অনিমেষ অভিজ্ঞ। অভয় দিয়ে ওকে বলে, ‘ভরসা রাখো আমার ওপর। আমি কেবল দেহ মিলনে প্রত্যাশী নই। মন আত্মার সন্ধান করছি। বুঝলে?
হ্যাঁ। নম্রভাবেই এবার লক্ষ্নী উত্তর দেয়। স্থির হয়ে শুয়ে থাকে। অনিমেষকে ওর পা দুটো মনের মতন করে সাজাতে দেয়।
অনিমেষ বলে, ‘এবার তোমার চোখ দুটো বন্ধ কর, লক্ষ্নী।’
লক্ষ্নী অনিমেষের আদেশ মান্য করে। অনিমেষ আরো ঘনিষ্ঠ হয়ে ওর নগ্ন শরীর নিরীক্ষণ করে।
‘তোমার শরীরটা খুব সুন্দর লক্ষ্নী’ ভাল খুব ভাল। সুন্দর এক প্রকৃতির কোলে রয়েছ তুমি। তুমিও এক প্রকৃতি। ওপর ওয়ালার দয়ায় তুমি যেটা পেয়েছ, খুব ভাল। কে বলল, তুমি খারাপ? জানোতো পুরুষরা এর জন্যই এত ছটফট করে ওঠে। যখন সে সুখ পাওয়ার জন্য মরীয়া হয়ে ওঠে। তখন সে নারীকেও প্রতিদানে সুখ দেয়। আজ তোমাকে আমি সেই সুখের সন্ধান দেব। বুঝতে পারছ?’
‘হ্যাঁ।’ লক্ষ্নী চোখ বন্ধ করে। অনিমেষের কথার জাদুতে সে আস্বস্ত। প্রথমে সে আবেগে এমন কাজটি করে ফেলেছে। তারপর ভয় পায়নি তা নয়। কিন্তু এখন এই পরিণত পুরুষকে ভরসা করার সাহস পাচ্ছে। স্তনবৃন্ত তালে তালে স্পন্দিত ও স্ফীত হয়ে উঠছে। সেই সাথে মুখও বেশ আরক্ত।
No comments:
Post a Comment